ভালোবাসা দিবস কি: এর ইতিহাস, প্রচলন, উদযাপন ও গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা
১৪ ফেব্রুয়ারি। ভালোবাসা দিবস। ভ্যালেন্টাইনের দিন আমরা আমাদের জীবনের ভালোবাসার মানুষদের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করি অকপটে। প্রিয়জনের জন্য উপহার কেনা কিংবা কয়েক লাইনের শুভেচ্ছা বানী দিয়ে নিজের ভালোবাসা প্রকাশের এমন দারুণ সুযোগটি হাতছাড়া করতে চায় না কেউই।
ভালোবাসা দিবস বা ভ্যালেন্টাইন ডে
ভালোবাসা দিবস কবে (ভালোবাসা দিবস কত তারিখে) বা ১৪ই ফেব্রুয়ারি কি দিবস- এ তথ্য জানে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। প্রতি বছর ১৪ ফেব্রুয়ারিকে বিশ্ব ভালোবাসা দিবস হিসেবে পালন করা হয়। সারা বিশ্বে এখন তুমুল জনপ্রিয় ভ্যালেন্টাইন ডে বা ভালোবাসা দিবস। ভালোবাসা ব্যাপারটিকে সম্মান জানিয়ে পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই নানাবিধ আয়োজন করা হয় ১৪ ফেব্রুয়ারি দিনটিকে কেন্দ্র করে। সারাদিন ধরে বিভিন্ন স্থানে চলে নানা বর্নিল আয়োজন ও কনসার্ট। রেডিও-টেলিভিশনে প্রচারিত হয় বিভিন্ন চমৎকার প্রোগ্রাম, সেলিব্রেটি শো। এদিন তরুণ-তরুণীরাও চায় প্রিয় মানুষটির সাথে কিছু সুন্দর মুহূর্ত কাটাতে। ভালোবাসা দিবস বা সেইন্ট ভ্যালেন্টাইন ডে এর আবেদন শুধুমাত্র প্রেমের সম্পর্কের মধ্যে সীমাবদ্ধ না হয়ে হতে পারে আরো দারুণ কিছুর সূচনা।
ভালোবাসা দিবসের নামকরণ
ভালোবাসা দিবসটি কিভাবে এলো বা কিভাবে প্রচলিত হলো ভ্যালেন্টাইন’স ডে (ভেলেন্টাইন ডে এর ইতিহাস)- এ সম্পর্কে কিছু মতানৈক্য থাকলেও ভ্যালেন্টাইন ডে’র ভালবাসার জনক কে এই প্রশ্নের উত্তরে সকলেই সেইন্ট ভ্যালেন্টাইন এর নাম স্মরণ করে থাকেন। তার নাম অনুসারেই ১৪ ফেব্রুয়ারি দিনটিকে ভ্যালেন্টাইন’স ডে হিসেবে নামকরণ করা হয়।
ভালোবাসা দিবসের ইতিহাস: কিভাবে এলো ভালোবাসা দিবস
২৬৯ সালে ইতালির রোম নগরীতে সেন্ট ভ্যালেন্টাইন নামে একজন খ্রিস্টান পাদ্রী ও চিকিৎসক ছিলেন। তখন রোমান সাম্রাজ্যে খ্রিস্টান ধর্ম প্রচার নিষিদ্ধ। ধর্ম প্রচারের অভিযোগে বন্দী করা হয় সেন্ট ভ্যালেন্টাইনকে। কিন্তু তরুণদের ভেতর ভ্যালেন্টাইনের ছিলো দারুণ জনপ্রিয়তা। কথিত আছে, রোমান সম্রাট যুবক-যুবতীদের মধ্যে বিয়ে নিষিদ্ধ করেছিলেন যাতে তরুণরা আরো সহজে যুদ্ধে যোগ দেয়। এদিকে ভ্যালেন্টাইনের উপর ছিলো তরুণদের গোপনে বিয়ে পড়ানোর অভিযোগ। যখন বন্দী ছিলেন সেইন্ট ভ্যালেন্টাইন কারারক্ষীর এক অন্ধ মেয়েকে চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ করে তোলেন। এতে তার জনপ্রিয়তা আরো বেড়ে যায় যা ক্ষিপ্ত করে তোলে রাজাকে। সেইন্ট ভ্যালেন্টাইনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয় ১৪ই ফেব্রুয়ারি।
পরে ৪৯৬ সালে তৎকালীন পোপ ১৪ই ফেব্রুয়ারিকে ভ্যালেন্টাইন দিবস হিসেবে ঘোষণা করেন। তারপর থেকেই দিনটি উজ্বল হয়ে আছে ভালোবাসাকে উদযাপন করার উপলক্ষে। ভালবাসা দিবসের উৎপত্তি কিভাবে তা জানলে সহজেই বোঝা যায় ভালোবাসা দিবস পালনের উদ্দেশ্য।
বাংলাদেশে ভালোবাসা দিবস উদযাপন
পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও উৎসাহ-উদ্দীপনার মাধ্যমে পালন করা হয় ভালোবাসা দিবস। এদিন প্রিয় মানুষটির সাথে বিশ্ব ভালোবাসা দিবসের এস এম এস আদান-প্রদানের মাধ্যমে নিজেদের ভালোবাসা ভাগ করে নেয়া হয়। প্রিয় মানুষটিকে উপহার প্রদানের মাধ্যমে প্রিয় সম্পর্ককে আরেকটু ঝালিয়ে নেয়ার সুযোগটাও লুফে নেয় সবাই। ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন স্থানে আয়োজন করা হয় কনসার্ট ও সাংস্কৃতিক প্রোগ্রামের, বিভিন্ন শপিং আউটলেটে থাকে নানা ধরণের ছাড় ও আয়োজন। বর্তমানে এই দিনটিকে ঘিরে থাকে এক ধরণের উৎসবের আমেজ। পার্ক ও বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে থাকে উপচে পড়া ভিড়। দিনটিকে নিজের মতো করে পালন করতে চেষ্টা করে সাধারণ মানুষেরাও।
ভালোবাসা দিবসের কার্ড, এসএমএস ও উপহার
ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে প্রিয়জনের মুঠোফোনে ভ্যালেন্টাইন ডে কবিতা (ভালোবাসা দিবসের কবিতা), ভালোবাসা দিবসের পিকচার (ভালোবাসার রোমান্টিক ছবি), ভালোবাসার পিকচার, ভালোবাসা দিবসের ছবি কিংবা ভ্যালেন্টাইন ডে মেসেজ (ভালোবাসা দিবস sms) পাঠিয়ে অনেকেই শুরু করেন এই দিনটি।
রোজ ডে – ফেব্রুয়ারি ৭
প্রোপোজ ডে- ফেব্রুয়ারি ৮
চকোলেট ডে – ফেব্রুয়ারি ৯
টেডি ডে – ফেব্রুয়ারি ১০
প্রমিজ ডে – ফেব্রুয়ারি ১১
হাগ ডে – ফেব্রুয়ারি ১২
কিস ডে – ফেব্রুয়ারি ১৩
ভ্যালেন্টাইন ডে – ফেব্রুয়ারি ১৪
বিশ্ব ভালবাসা দিবসের শুভেচ্ছা সবাইকে, শুভ ভালোবাসা দিবস!
এই প্রবন্ধটি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। অনুগ্রহ করে এটি শেয়ার করুন এবং আমার ওয়েবসাইট www.easytouchbr.com এর ভবিষ্যত বাড়াতে সমর্থন করুন এবং কোনো ভুল এুটি পরিলক্ষিত হলে অবশ্যই জানাবেন।